রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন

পূর্বাপরের আয়নায় কবি ও চিকিৎসক (অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) নাজমা বেগম নাজু

পূর্বাপরের আয়নায় কবি ও চিকিৎসক (অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) নাজমা বেগম নাজু

পূর্বাপরের আয়নায় কবি ও চিকিৎসক নাজমা বেগম নাজু >-সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহাদাত হোসেন জয়

<>নাজমা বেগম নাজু বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর মিলিটারি চিকিৎসক হিসাবে প্রশংসা ও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।সেনা বাহিনীর ইতিহাসে প্রথম নারী ফিল্ড এ্যাম্বলেন্স কমান্ডার ও প্রথম এ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মেডিকেল সার্ভিসেস তিনি।বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী হাসপাতাল কমাণ্ডার।তিনি জাতিসংঘ ইতিহাসের প্রথম নারী কন্টিনজেন্ট কমান্ডারও।বিশ্বের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র নারী যিনি পরপর দু’ বার জাতিসংঘে কান্ট্রি সিনিয়র হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
<>তার নিকট পূর্বাপরের প্রশ্ন ছিল নিম্নরূপ –

<>প্রশ্ন ১.সাহিত্য সংস্কৃতির কোন কোন শাখায় কাজ করতে আপনি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন?
<>প্রশ্ন ২.মানুষ হিসেবে সামাজিক দায় আছে।এটা আপনি কি ফিল করেন?
<>প্রশ্ন ৩.আপনার সমাজকর্ম,কবিতা,গল্প,উপন্যাস বা সঙ্গীতে কি সেই দায় পরিশোধের চেষ্টা করেন?
<>প্রশ্ন ৪.যুগটা এখন ভঙ্গুর এবং সাম্প্রদায়িক সংঘাতের কাল।কেনো এমন হচ্ছে বলে আপনি মনে করেন?
<>প্রশ্ন ৫.সুন্দর পৃথিবী গড়তে হলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে।মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করতে হবে,আপনি কি এর সঙ্গে একমত?
<>প্রশ্ন৬.মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করতে হলে কী কী উদ্যোগ নিতে হবে বলে আপনি মনে করেন?

<>উত্তর ১.লিখতে ভালবাসি ভীষন। এই একটি মাধ্যম সংস্কৃতির যা ছাড়া নিজেকে বড় বেশি অর্থহীন আর অসম্পূর্ণ মনে হয়।আমার যা কিছু হাসি আনন্দ বিষন্নতা ব্যর্থতা সবকিছুই রোজকার সাহিত্য অংগনের বংবাহারী ফুল হয়ে ফুটুক এমনটিই চাই।এছাড়াও আবৃত্তি, গীটার, সংগীতের মত অপার সৌন্দর্যগুলোকেও জীবনের সাথে জড়িয়ে রাখি, পরিচর্চায় সতেজ রাখি।আমার প্রকাশিত গ্রন্হের সংখ্যা প্রায় ৭০ এর কাছাকাছি।

<>উত্তর ২. দায় অনেক, দায়বদ্ধতাও অনেক। জীবনের সবটুকু দায় প্রতিটি মূহুর্ত দিয়েই শোধরাতে হবে অনুভব করি অনুক্ষণই।

<উত্তর ৩. দায় পরিশোধের আকুলতা প্রতি নিমেষেই আচ্ছন্ন রাখে আমাকে।একসময় ভাবি কিছুটা পরিশোধে পরিশুদ্ধ হয়েছি– ভাল লাগে আত্মতৃপ্তি পাই। পরমূহুর্তেই মনে হয় – না, কিছুই শোধ করতে পারিনি। একজন চিকিৎসক হিসাবে যা কিছু করার ছিল কানাকড়িও শোধরাতে পারিনি আর কথাশিল্পী হিসাবে তো আরো অনেক ঋণ রয়ে গেছে যা পরিশোধের সাধ্য আমার নেই। মাঝে মাঝে এই ব্যর্থতা গুলো বড় বেশি অস্হির করে আমাকে, বড় বেশি কষ্ট দেয়।

<>উত্তর ৪. আমি একমত নই। যুগের ধারা সময়ের বিবর্তনে হয়ত বা কিছুটা অস্থিতিশীল কিন্তু ভঙ্গুর শব্দটি সম্পূর্ণ ভাবে প্রযোজ্য নয়। সমাজ এবং প্রথিবীর জন্য শুভাশীষ ধরে রাখা সুন্দর মনের মানুষগুলো এখনো সংখ্যায় বেশি। আর মানব সভ্যতা এবং পৃথিবীর ইতিহাস দেখুন — সভ্যতার শুরু হতেই সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছিল। জাতিগত, বর্ণগত, ধর্মগত দাঙ্গায় কত শত বার রক্তস্নাত হয়েছে পৃথিবীর বুক।তুলনামূলকভাবে এখন কিছুটা হলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নামের শব্দটিকে আত্মায় গেঁথে নিতে এবং গেঁথে দিতে সক্ষম হয়েছি। তবে স্বার্থান্বেষী কিছুমহল এই সুন্দর সহাবস্থানটাকে ধ্বংস করতে তৎপর থাকে। এটা আগেও ছিল। বরং এখন আমাদের অবস্হানই শক্ত। শত দানা বাঁধলেও যে কোন সাম্প্রদায়িক সংঘাতকে রুখে দিতে পারি আমরাই।

<>উত্তর ৫. বিজ্ঞান জীবনেরই পরম অংশ এবং জীবন বিজ্ঞানের। আমাদের দেহ মন – মস্তিষ্কের প্রতিটি কণা অনুকনায় রয়েছে বিজ্ঞানের জীবন্ত কারুকাজ এবং স্বাক্ষর। এই জীবনকে সুন্দর এনং সাফল্যমন্ডিত করতে হলে বিজ্ঞানের বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না। আমি প্রশ্নাতীত ভাবে একমত।

<>উত্তর ৬.উদ্যোগ নিতে হব সব ক্ষেত্রেই। ব্যাপক প্রচার ও প্রচারনা চালাতে হবে। সমাজ এবং পরিবারের সাথে সাথে রাষ্ট্রকেও সক্রিয় হতে হবে। প্রতিটি পরিবারকে উদ্যোগী হতে হবে। স্কুলগুলোকে শিশুদের ব্যাপারে তৎপর হতে হবে, বিজ্ঞান চর্চার ব্যাপারে তাদের আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে। আন্তর্জাতিক মানের বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে বিজ্ঞান গবেষণাকে সাফল্যমন্ডিত ও উৎসাহ ব্যন্জক করতে হবে। তরুন প্রজন্মের মেধাকে যথাযথ ভাবে কাজে লাগিয়ে নতুন আবিস্কার ও প্রযুক্তিকে মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে।
<>ধন্যবাদ

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




themesbazar_brekingnews1*5k
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD